বিলাসি
01. ন্যাড়ার মাদুলি-কবচ কবরে দেওয়ার পরে তার কাছে আর কী অবশিষ্ট রইল?
উত্তরঃ
ন্যাড়ার মাদুলি কবচ দেওয়ার পরে তার কাছে আর অবশিষ্ট রইল বিষহরির আজ্ঞা।
02.
'ঠিক যেন ফুলদানিতে জল দিয়া ভজাইয়া রাখা বাসি ফুলের মতো।' ব্যাখ্যা
কর।
উত্তরঃ
উদ্ধৃত উক্তিটির মাধ্যমে মৃত্যুঞ্জয়ের সেবায় রত বিলাসীর শারীরিক অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে।
বিলাসী গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়লে বিলাসী রাতের পর রাত জেগে সেবা করে। এই নির্বিচ্ছিন্ন পরিশ্রমে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তার সারা শরীরে একটা অপরিসীম ক্লান্তি ও নিরবিচ্ছিন্ন রাত জাগার ছাপ পড়ে যায়। তার এ
সজীবতাহীন ও অবসন্ন শরীরকে গল্পের কথক তুলে ধরেছে উক্তিটির মাধ্যমে।
03. 'বিলাসী' গল্পের গল্পকথকের নাম কী?
উত্তরঃ
'বিলাসী' গল্পের গল্প কথকের নাম ন্যাড়া।
04. "ওরে বাপরে! আমি একলা থাকতে পারব না।" উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
উক্তিটির মাধ্যমে ন্যাড়া তার এক আত্মীয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তার মেকি স্বামীপ্রেমের প্রতি ইঙ্গিত করেছে।
'বিলাসী' গল্পে ন্যাড়ার এক আত্মীয় মারা গেলে তার বিধবা স্ত্রী শোকাহত হয়ে স্বামীর সঙ্গে সহমরণের জন্য হাহাকার করতে থাকে। কিন্তু লাশের পাশে তাকে একাকী রেখে ন্যাড়া যখন মৃতের সৎকারের জন্য লোক ডাকতে বাইরে পা বাড়ায়,
তখনই সে চিৎকার করে উদ্ধৃত উক্তিটি করে। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, বহুদিনের সাহচর্য সত্ত্বেও হৃদয়ের গভীর সংযোগ ঘটেনি। এভাবে উক্তিটির মধ্য দিয়ে তার মেকি স্বামীপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
05. 'বিলাসী' গল্পটি প্রথমে কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ
'বিলাসী' গল্পটি প্রথম 'ভারতী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
06. "গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের ছিল এমনি সুনাম" ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের নেতিবাচক ভাবমূর্তিকে ব্যঙ্গার্থে 'সুনাম' বলা হয়েছে।
মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে উদ্ধৃত উক্তিতে 'সুনাম' শব্দটি গল্পকথক ন্যাড়া 'দুর্নাম' অর্থে ব্যবহার করেছে। আত্মীয়-পরিজনহীন মৃত্যুঞ্জয়ের এক জ্ঞাতি খুড়া ছিল। সে তার নামে দুর্নাম রটনা করে বেড়াত। দুর্নাম রটানোর কারণে গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের এমন
একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল যে, গ্রামবাসী তার সঙ্গে প্রকাশ্যে মেলামেশা দূরে থাক, তার সঙ্গে সংশ্রব থাকার কথাটা পর্যন্ত স্বীকার করত না। নিজ গ্রামে মৃত্যুঞ্জয়ের এমন নেতিবাচক ভাবমূর্তি প্রসঙ্গেই গল্পটিতে উদ্ধৃত উক্তিটির
অবতারণা করা হয়েছে।
07. 'বিলাসী' গল্পে কোন মোগল সম্রাটের নাম উল্লেখ আছে?
উত্তরঃ
'বিলাসী' গল্পে মোগল সম্রাট হুমায়ুনের নাম উল্লেখ আছে।
০৪. "একলা যেতে ভয় করবে না তো?' কে, কাকে এবং কেন এই উক্তিটি করেছিল? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তরঃ
আম বাগানের জমাট বাঁধা অন্ধকারের মধ্য দিয়ে যেতে ভয় করবে কি না তা জানতে চেয়ে বিলাসী ন্যাড়াকে উদ্দেশ করে আলোচ্য উক্তিটি করেছে।
দীর্ঘদিন মৃত্যুঞ্জয়ের দেখা না পেয়ে, তার মর মর অবস্থার কথা জানতে পেরে তাকে দেখতে এসেছিল ন্যাড়া। ফেরার সময় পথ এমনকি নিজের হাতও দেখতে না পাওয়া জমাট অন্ধকারে আম বাগানের ভেতর দিয়ে আসতে যে কারো দারুণ ভয়
পাওয়ার কথা। বিলাসী সে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ন্যাড়ার কাছে জানতে চেয়েছে সে একা যেতে ভয় পাবে কি না।
09. 'বিলাসী' গল্পে কোন রোগের নাম আছে?
উত্তরঃ
বিলাসী গল্পে ম্যালেরিয়া রোগের নাম আছে।
10. 'গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের ছিল এমনি সুনাম।' ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ
প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের নেতিবাচক ভাবমূর্তিকে ব্যঙ্গার্থে 'সুনাম' বলা হয়েছে।
মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে উদ্ধৃত উক্তিতে 'সুনাম' শব্দটি গল্পকথক ন্যাড়া 'দুর্নাম' অর্থে ব্যবহার করেছে। আত্মীয়-পরিজনহীন মৃত্যুঞ্জয়ের এক জ্ঞাতি খুড়া ছিল। সে তার নামে দুর্নাম রটনা করে বেড়াত। দুর্নাম রটানোর কারণে গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের এমন
একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল, যে, গ্রামবাসী তার সঙ্গে প্রকাশ্যে মেলামেশা দূরে থাক, তার সঙ্গে সংশ্রব থাকার কথাটা পর্যন্ত স্বীকার করত না। নিজ গ্রামে মৃত্যুঞ্জয়ের এমন নেতিবাচক ভাবমূর্তি প্রসঙ্গেই গল্পটিতে উদ্ধৃত উক্তিটির
অবতারণা করা হয়েছে।
11. বিলাসী' গল্পের কথক কে?
উত্তরঃ
'বিলাসী' গল্পের কথক ন্যাড়া নামের এক যুবক।
12. গেল গেল, গ্রামটা এবার রসাতলে গেল' উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ
'গ্রামটা এবার রসাতলে গেল'- একথা মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া মৃত্যুঞ্জয়- বিলাসীর পরিণয় মেনে নিতে পারেননি বলে লেছেন।
'বিলাসী' গল্পে বর্ণপ্রথায় আচ্ছন্ন বাঙালি সমাজের কথা বর্ণিত হয়েছে। মানুষ নয় বর্ণভেদই তাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মৃত্যুঞ্জয় কায়স্থের ছেলে হয়ে বিলাসীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে, এটি সমাজ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি।
সাপুড়ের মেয়েকে বিয়ে এবং তার হাতে অল্পগ্রহণ তাই মৃত্যুঞ্জয়ের জন্য মহাপাপ বলে বিবেচিত হয়। বিশেষত মৃত্যুঞ্জয়ের খুড়া এ বিষয়ে তীব্রকণ্ঠ। তিনি এতে সামাজিক রীতিনীতি ধ্বংস হওয়ার আলামত দেখে এহেন মন্তব্য করেছেন।
"ঠিক যেন ফুলদানিতে জল দিয়া ভিজাইয়া রাখা বাসি ফুলের মতো।" বলতে কী বুঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ
উদ্ধৃত উক্তিটির মাধ্যমে অসুস্থ মৃত্যুঞ্জারের সেবায় রত বিলাসীর কৃষ্ণ শারীরিক অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে। "বিলাসী' গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়লে বিলাসী রাতের পর রাত জেগে তার সেবা-শুশ্রূষা করে। এই নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রমে
বিলাসী সে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তার সারা শরীরে একটা অপরিসীম ক্লান্তি ও নিরবচ্ছিন্ন রাত জাগার ছাপ পড়ে যায়। তার এ সজীবতাহীন ও অবসন্ন শরীরকে গল্পের কথক তুলে ধরেছে উক্তিটির মাধ্যমে।
21. 'বিলাসী' গল্পে মৃত্যুঞ্জয় কোন ক্লাসে পড়ত?
উত্তরঃ
'বিলাসী' গল্পে মৃত্যুঞ্জয় আজীবন থার্ড ক্লাসে পড়ত।
22. "স্বদেশের মঙ্গলের জন্য সমস্ত অকাতরে সহ্য করিয়া তাহাকে হিড়হিড় করিয়া টানিয়া লইয়া চলিলাম।"-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
উদ্ধৃত উক্তিটিতে স্বার্থান্ধ-কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামবাসীর সাপুড়েকন্যা বিলাসীর ওপর আক্রমণের কারণ সম্পর্কে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তৎকালীন সমাজ মৃত্যুঞ্জয়-বিলাসীর প্রেম ও সেবা করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। কায়স্থের
ছেলে মৃত্যুঞ্জয়ের সাপুড়েকন্যা বিলাসীর হাতে রান্না করা ভাত খাওয়াকে অন্নপাপ, এবং জাত যাওয়ার মতো ঘটনা হিসেবে সাব্যস্ত করে।
এক সন্ধ্যায় দশ-বারোজনের একটি দল অতর্কিতে বিলাসীর ওপর হামলা চালায়। অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের কোনো কথাই তারা শোনে না। তারা বীরদর্পে হুঙ্কার দিয়ে বিলাসীকে হিড়হিড় করে টেনে বাইরে নিয়ে যেতে থাকল। এ সবই তারা করেছিল ধর্ম
ও গ্রামের মুখ রক্ষার অজুহাতে। নিচু জাতের বলে তারা বিলাসীর প্রতি এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছিল।
23. মৃত্যুঞ্জয় কোন ক্লাসে পড়ত?
উত্তরঃ
মৃত্যুঞ্জয় আজীবন থার্ড ক্লাসে পড়ত।
24. "একদিন এই মন্ত্রের সত্য-মিথ্যার চরম মীমাংসা হইয়া গেল।"-উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তরঃ
সাপের কাপড়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর মাধ্যমেই সাপ ধরার মন্ত্রের সত্য-মিথ্যার মীমাংসা হয়ে গেল। সাপ ধরার একটি মন্ত্র রয়েছে যেটিকে বিষহরির আজ্ঞা বলা হয়। সেই মন্ত্র বলে সাপকে পোষ মানানো যায়, সাপকে যা বলা যায় সাপ তাই করতে বাধ্য
হয়। কিন্তু এটিও ছিল নিছক অন্ধ-বিশ্বাস। গোয়ালার বাড়িতে সাপ ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়েই বিষহরির আজ্ঞা যে নেহায়েত একটি কুসংস্কার, সেটিই প্রমাণিত হয়।
25. 'বিলাসী' গল্পটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ
ভারতী।
26. 'অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলেপোকা টিকিয়া আছে'- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
শরৎচন্দ্রের বিখ্যাত উক্তি-"অতিকায় হস্তি লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।" অতিকায় হস্তি বা ম্যামথরা টিকে থাকতে পারে নি, কিন্তু তেলাপোকা সেই প্রাচীন কাল থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে বহাল তবিয়তে টিকে আছে বিবর্তন
প্রক্রিয়ায় বড় ধরণের কোনো শারীরিক পরিবর্তন ছাড়াই!
27. কামস্কাটকা দ্বীপটি কোন মাছের দেশ নামে পরিচিত?
উত্তরঃ
কামস্কাটকা দ্বীপটি স্যামন মাছের দেশ নামে পরিচিত।
28. 'বিলাসী' গল্পে "দেখ, এমন করে মানুষ ঠকায়ো না" কে, কেন বলেছে?
উত্তরঃ
দেখ, এমন করে মানুষ ঠকায়ো না কথাটি মৃত্যুধঞ্চয় কে বলা হয়েছে। বিলাসী একজন সাপুড়ে মেয়ে। কিন্তু সে মৃত্যু ধঞ্চয়ের মূমুর্ষ অবস্থা থেকে আরোগ্য লাভ করতে সহযোগিতা করেছে।
বিলাসী যেন ঠকে না যায় এজন্য কথাটি বলা হয়েছে।
29. 'মাসি-পিসি' গল্পে আহ্লাদির বাবা, মা, ভাই কোন রোগে মারা যায়?
উত্তরঃ
'মাসি-পিসি' গল্পে আহ্লাদির বাবা, মা, ভাই কলেরা রোগে মারা যায়।
30. "বুড়ো রহমান ছলছল চোখে তাকায় আহ্লাদির দিকে।"- কেন? বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ
বুড়ো রহমান ছলছল করে তাকায় আহ্লাদির দিকে কারণ আহ্লাদির উচিত এখন স্বামীর ঘরে থাকা কিন্তু মাসি পিসি সেটা ভুল করছে। আহ্লাদির মায়া মুখে তাকিয়ে বুড়ো রহমান ছলছল চোখে তাকিয়েছেন।
31. 'পারিবারিক প্রবন্ধ' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
33. ন্যাড়ার সন্ন্যাসীগিরি ইস্তফার কারণ কী?
উত্তরঃ
মশার কামড় সহ্য করতে না পেরে ন্যাড়া সন্ন্যাসীগিরিতে ইস্তফা দেন।
34. 'অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।'
উত্তরঃ
সংকীর্ণমনা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের প্রতি তীব্র কটাক্ষ হিসেবে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।
গৌরবের সঙ্গে টিকে থাকার মধ্যেই রয়েছে জীবনের সার্থকতা। যেন তেন প্রকারের টিকে থাকার মধ্যে জীবনের সার্থকতা নেই। তৎকালীন সমাজে। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, অনাচার-অবিচারকে উপায়
হিসেবে গ্রহণ করত। এ ধরনের অসুস্থ মানসিকতা নিয়ে বেঁচে থাকার কোনো গৌরব নেই। লেখকের মতে তেলাপোকা হয়ে টিকে থাকার চেয়ে অতিকায় হস্তী হয়ে মরে যাওয়াও গৌরবের।
35. ন্যাড়া সন্ন্যাসী অবস্থায় কোথায় গিয়ে সিদ্ধি লাভ করে এসেছে?
উত্তরঃ
ন্যাড়া সন্ন্যাসী অবস্থায় কামাখ্যায় গিয়া সিদ্ধ হইয়া আসিয়াছে।
36. স্বদেশের মঙ্গলের জন্য সমস্ত অকাতরে সহ্য করিয়া টানিয়া লইয়া চলিলাম'- উক্তিটি বাখ্যা করো।
উত্তরঃ
প্রশ্নোক্ত উক্তিটি বিলাসীকে গ্রামের বাইরে রেখে আসার ঘটনায় ব্যঙ্গার্থে করা হয়েছে।
অন্নপাপের অজুহাতে গ্রামের লোকেরা বিলাসীকে অকথ্য নির্যাতন করে গ্রামের বাইরে রেখে আসার জন্য টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের জন্য তৈরি করা রুটিগুলো ঘরে দিয়ে আসার কথা বললেও তার আকুতিতে কারো মন
গলেনি। মৃত্যুঞ্জয়ের মাথা কোটা, দ্বারে পদাঘাত, গালাগালি কাউকে বিন্দুমাত্র বিচলিত করতে পারেনি। কেননা, তাদের মনে হয়েছিল এভাবে বিলাসীকে গ্রামের বাইরে বের করে দিতে পারলেই স্বদেশের মঙ্গল ঘটবে।
37. 'সাইবেরিয়া' এশিয়ার কোন অঞ্চলে অবস্থিত?
উত্তরঃ
'সাইবেরিয়া' এশিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত।
38. "সে কত বড় সাহসের কাজ!" সপ্রসঙ্গ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
"সে কত বড় সাহসের কাজ!"- এই উক্তিটিতে অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে সুস্থ করে তুলতে বিলাসীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাহসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন গল্পের কথক ন্যাড়া।
'বিলাসী' গল্পে মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে প্রায় দেড় মাস যাবৎ শয্যাগত থাকে। তার পাশে ছিল শুধু বিলাসী। এমন একজন মুমূর্ষু রোগীকে সুস্থ করার প্রয়াস নিয়ে বনের মধ্যে পোড়োবাড়িতে একাকী একটি মেয়ে যে চেষ্টা চালিয়েছে সেটি নিশ্চিতভাবেই
সাহসী পদক্ষেপ। গল্পকথক ন্যাড়ার কাছে এটি অনেক বড় একটি গুরুভার। কেননা দিনের পর দিন, রাতের পর রাত একা একটি মেয়ের কত সেবা, শুশ্রূষা, ধৈর্য ও রাত জাগা নিয়ে মুমূর্ষু একজন মানুষের পাশে থাকা কোনো সাধারণ বিষয় নয়।
তাই ন্যাড়া বিলাসীর এমন কাজকে বড় সাহসের কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
39. 'বিলাসী' গল্পের বর্ণনাকারী কে?
উত্তরঃ
বিলাসী' গল্পের বর্ণনাকারী ন্যাড়া।
40. মৃত্যুঞ্জয়ের 'জাতবিসর্জনের' কারণ বর্ণনা কর।
উত্তরঃ
মৃত্যুঞ্জয়ের জাত বিসর্জনের কারণ হলো বিলাসীর প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সমাজের চোখরাঙানি।
মৃত্যুঞ্জয় কায়স্থের ছেলে। তার বাবা-মা বেঁচে নেই। গ্রামের আর দশটা ছেলের মতো সেও লেখাপড়া করে। কিন্তু ছাত্র হিসেবে ভালো নয় বিধায় সে কখনো থার্ড ক্লাস অতিক্রম করতে পারেনি। এদিকে পাড়ার এক সাপুড়ে মেয়ে বিলাসীর সঙ্গে তার ভালোবাসার সম্পর্ক
গড়ে ওঠে। গ্রামের রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ কিছুতেই সে সম্পর্ক মেনে নেয়নি। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় তার ভালোবাসার টানে এবং সমাজপতিদের নানা অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাপুড়ে কন্যা বিলাসীকে বিয়ে করার মধ্য দিয়ে জাত-ধর্ম বিসর্জন দেয়।
41. 'বিলাসী' গল্পের ন্যাড়া কত ক্রোশ পথ হেঁটে স্কুলে যেত?
উত্তরঃ
'বিলাসী' গল্পের ন্যাড়া দুই ক্রোশ পথ হেঁটে স্কুলে যেত।
42. "গ্রামটা এবার রসাতলে গেল।" ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
"গ্রামটা এবার রসাতলে গেল।" এ কথা 'বিলাসী' গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের জ্ঞাতি খুড়া বলেছিলেন মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়ের মেয়ে বিলাসীকে বিয়ে করার কারণে এবং তার হাতে ভাত খাওয়ার অপরাধে।
'বিলাসী' গল্পে সাপুড়ের মেয়ে বিলাসী রাত জেগে সেবা করে মৃত্যুপথযাত্রী মৃত্যুঞ্জয়কে সুস্থ করে তোলে। মৃত্যুঞ্জয় ভালোবেসে বিলাসীকে বিয়ে করলে তার খুড়া জাতভেদের কথা 'তুলে গ্রামটা রসাতলে গেল বলে তোলপাড় শুরু করেন। সমাজে
তার আর মুখ দেখানোর জায়গা থাকল না, সবাইকে ডেকে ডেকে এ কথা বলেন। বিয়ের কথা বাদ দিলেও, বিলাসীর হাতে সে ভাত পর্যন্ত খেয়েছে। গ্রামে যদি এর শাসন-বিচার না থাকে তাহলে তো বনে-জঙ্গলে গিয়ে বাস করতে হবে। মৃত্যুঞ্জয়ের
জ্ঞাতি খুড়া মূলত মৃত্যুঞ্জয়ের সম্পত্তি দখলের জন্যই এমন তোলপাড় কান্ড করেছেন।
43. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কত সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি প্রদান করে?
উত্তরঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৩৬ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি প্রদান করে।
44. আমার মাথার দিব্যি রইল, এসব তুমি আর কখনো করো না।"- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ
সাপের ছোবলে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যু হলে বিলাসী ন্যাড়াকে সাপ ধরা ও সাপের খেলা দেখাতে নিষেধ করে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করে।
মৃত্যুঞ্জয় ও ন্যাড়ার সাপ ধরা নিয়ে অসাবধানতার ভয় সব সময়েই বিলাসীর মনে ছিল। সে জানত সাপ ভয়ংকর প্রাণী। তাই সাপ ধরা আর সাপ খেলানোয় তাদের সতর্ক হতে বিলাসী সব সময়ই উপদেশ দিত। অবশেষে একদিন বিলাসীর কথাই
মর্মান্তিকভাবে ফলে গেল। সাপের কামড়ে মৃত্যু হলো মৃত্যুঞ্জয়ের। মিথ্যা প্রতিপন্ন হলো সব মন্ত্রতন্ত্র, মাদুলি, কবচ, মনসার দোহাই ইত্যাদি। মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর পর সাপ আর বিষ সম্পর্কে বিলাসীর ধারণা আরও বন্ধমূল হলো যে তা কতটা ভয়ংকর।
তাই বিলাসী ন্যাড়াকে মাথার দিব্যি দিয়ে সাপ ধরতে ও সাপের খেলা দেখাতে নিষেধ করে বলেছিল, 'আমার মাথার দিব্যি রইল, এসব তুমি আর কখনো করো না।'
Post a Comment